আস-সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু আমাদের সাইটে ভিজিট করার জন্য আপনাকে আন্তরিক মোবারকবাদ

অসাধারণ একটি রম্যরচনা ঘোড়ার মালিকের বিপদ

ইমরান মাহমূদ সাইন্টিস্ট

বন্ধুরা! আজকে তোমাদের শুনাবো একটুখানি হাসি মিশ্রিত শিক্ষণীয় একটি ঘটনা ৷ চলি আসল কথায় ৷আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টির জন্যে যা কিছু করতে হয় করে যাও ৷ লোকে কি বলবে সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করিও না ৷ কারণ একসাথে সবাইকে সন্তুষ্ট করা যাবে না ৷ তাহলে ঘোড়ার মালিকের অবস্থা হবে ৷এক ব্যক্তি তার ঘোড়ায় চড়ে সফরে বের হলো ৷ সঙ্গে তার স্ত্রী ও সন্তান হেঁটে যাচ্ছিল ৷একটি গ্রাম অতিক্রম করার সময় লোকেরা বললো, "দেখ,দেখ ৷ কত বড় নিষ্ঠুর ব্যক্তি! বিবি বাচ্চাদের হাঁটিয়ে মারছে আর নিজে জোয়ান মরদ সওয়ার হয়ে যাচ্ছে ৷"লোকটি ভাবলো লোকেরা তো ঠিকই বলছে ৷এই ভেবে সে নিচে নেমে আসলো এবং ছেলেকে ঘোড়ায় চড়িয়ে নিজে হেঁটে যেতে লাগলো ৷রাস্তায় ছেলেকে ঘোড়ার পিঠে দেখে গ্রামের লোকেরা বললো, "দেখ, দেখ ৷ ছেলেটা কত বড় বেয়াদব ৷ নিজে জোয়ান মরদ ঘোড়ায় চড়ে যাচ্ছে আর বৃদ্ধ বাবা মাকে হাঁটিয়ে মারছে ৷"লোকটি ভাবলো, এরা ঠিকই বলছে ৷সুতরাং এবার স্ত্রীকে ঘোড়ায় বসিয়ে নিজেরা হেঁটে যেতে লাগলো ৷অতঃপর একটি গ্রাম অতিক্রম করার সময় লোকেরা বলতে লাগলো, "একেই বলে বউয়ের মুরীদ ৷ মনে হচ্ছে বউয়ের কাছে একেবারে দাস-খত লিখে দিয়েছে ৷"লোকটি ভাবলো এরাও ঠিক বলছে ৷ এই ভেবে বিবি-বাচ্চা সবাইকে নিয়ে নিজে আবার চড়ে বসলো ৷অতঃপর এক গ্রাম অতিক্রম করার সময় লোকেরা দেখে বললো, "আরে! ঘোড়াটাকে কেন তিলে তিলে মেরে ফেলছে? একটা গুলি মেরে দিলেই তো হয়ে যায় ৷ একটা ঘোড়ায় একসাথে কতজন মানুষ সওয়ার হয়েছে দেখো!"লোকটি দেখলো সবাই ঠিক বলছে ৷ তাড়াতাড়ি সবাই নেমে পড়লো এবং লাগাম ধরে হেঁটে চললো ৷পথে লোকেরা তাদের দেখে বলতে লাগলো, " দেখ, না-শোকর বান্দা একেই বলে ৷ আল্লাহর নেয়ামতের কোন কদর নাই ৷ ঘরে নিজের যানবাহন দিয়েছে, অথচ সবাই হেঁটে হেঁটে মরছে ৷ আরে পালাক্রমে এক একজন করে চড়লেও তো পারে ৷ সওয়ার হওয়ার ইচ্ছাই যদি না থাকতো তবে সঙ্গে নিয়ে আসার কী দরকার ছিল? ঘরে বেঁধে রেখে আসলেই তো পারতো ৷"লোকটি দেখলো ঘোড়ায় চড়ার কোন পদ্ধতিই আর বাদ রাখা হয়নি ৷ সুতরাং এখন ঘোড়ায় না চড়ে(এবং ঘোড়াকে হাটিয়ে না নিয়ে) অন্য কোন পদ্ধতি আছে কিনা তাই করতে হবে ৷হঠাৎ লোকটির মাথায় একটি বুদ্ধি খেলে গেল ৷ একটি লম্বা বাঁশ নিয়ে আসলো ৷ বাঁশে ঘোড়ার চা পা বেঁধে ঘোড়াকে ঝুলিয়ে বাঁশের দুই দিক থেকে দুই বাপ-বেটা ঘাড়ে করে চলতে লাগলো ৷ ঘোড়ার মাথা নিচের দিকে থাকলো আর পা উপরের দিকে ৷ একটি নদী পার হওয়ার জন্য তারা যখন পুল পার হচ্ছিল তখন এই অদ্ভূদ দৃশ্য দেখে পাড়ার ছেলেরা সব হো হো করে চিৎকার দিয়ে উঠলো ৷ এই চিৎকার শুনে ঘোড়া ভয়ে এক ঝঁকুনি মেরে ছিটকে নদীতে পড়ে গেলো ৷ বাঁশের বাড়ি খেয়ে দুই বাপ-বেটা উপুড় হয়ে পড়ে কারো মাথা ফাটলো কারো থুতনী ফেটে রক্ত ঝরতে লাগলো ৷লোকটি দেখলো মানুষকে সন্তুষ্ট করার বিপদ কত মারাত্মক ৷ এত চেষ্টা করেও মানুষকে সন্তুষ্ট করা যাচ্ছেনা ৷ মানুষকে খুশি করতে গিয়ে ঘোড়াও হারালাম মাথাও ফাটলো ৷সুতরাং বন্ধুরা! মানুষের মন্তব্যকে ঝাড়ু মেরে দাও ৷শরীয়ত মতে যা সঠিক হয় তাই করে যাও ৷মানুষকে সন্তুষ্ট এবং আল্লাহকেও সন্তুষ্ট এই দুইটা একসাথে সম্ভব নয় ৷বরং মানুষের উক্তির প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে একমাত্র আল্লাহ পাকের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিলেই অগ্রগতি সম্ভব ৷
(মুসলমানের হাসি-1/46)

No comments

Theme images by EricHood. Powered by Blogger.